তাবলীগের বর্তমান সঙ্কটে মাওলানা সা’দ বিষয়ক প্রশ্নের উত্তরে জামিয়া পটিয়ার ফতওয়া!
বরাবর,
দারুল ইফতা,
আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া মাদ্রাসা,
পটিয়া, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ।
আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ
প্রশ্ন: তাবলীগ সংকট ও তাবলীগ জামাতের বর্তমান প্রেক্ষাপটে “মাও: সা’দ হাদাহুল্লাহর” আহলুচ্ছুন্নাহ ওয়াল জামাআতের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে বর্তমানে তার ভ্রান্ত আকীদার উপর পরিচালিত সাধারণ উম্মত ও সাধারণ তাবলিগী সাথদের তার অনুসরণ করা, তার দেয়া হেদায়েতের উপর জামাত পরিচালনা করা মসজিদে বয়ান ইত্যাদি জায়েয হবে কি? শরয়ী সমাধান চাই।
প্রশ্নকারী-
পটিয়াবাসীর পক্ষে-
পটিয়া এলাকার সর্বস্তরের আলেম-ওলামা ও সাধারণ তাবলিগী সাথীদের ২৩ জনের স্বাক্ষরসহ।
ফতওয়া নং:- ৪১,১১৩
তারিখ:- ২০-০১-২০১৯
সিরিয়াল নং:- ২১৭
ফতওয়া ও ইসলামী গবেষণা বিভাগ |
قسم الإفتاء والبحوث الإسلامية |
আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া |
الجامعة الإسلامية فتية |
চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ। |
شيتاغونغ،بنغلاديش. |
শরয়ী সমাধান
তাবলিগী জামাতের মধ্যে মৌলভী সা’আদ সম্পর্কে কওমী মাদ্রাসার মূল কেন্দ্র দারুল উলূম দেওবন্দ ভারত (أم المدارس القومية دار العلوم ديوبند) যে ফতওয়া দিয়েছে সে ফতওয়ার সাথে আমাদের আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়ার কর্তৃপক্ষ এবং আমাদের ফতওয়া বিভাগের মুফতিয়ানে কেরাম সবাই ঐক্যমত পোষণ করতেছি। কেননা যেহেতু মৌলভী সা’আদ ইন্ডিয়ার কান্ধালা নিবাসী, আর দারুল উলূম দেওবন্দ মাদ্রাসাও ইন্ডিয়াতে অবস্থিত। তাই তাহারা মৌলভী সা’আদ এর অবস্থা সম্পর্কে আমাদের চেয়ে বেশি অবগত। তাই মৌলভী সা’আদ বিভিন্ন প্রকারের তাবলিগী দাওয়াত সম্পর্কে যে অতিরঞ্জিত করতেছে এবং অশালীন কথাবার্তা বলতেছে এবং কুরআন হাদীসের মনগড়া তাফসীর করতেছে এবং তার মুরুব্বীদের সাথে বেয়াদবী করতেছে। এমতাবস্থায় তাবলীগ ও দাওয়াতের মত একটি পবিত্র মহতি খেদমতের মুরুব্বী এবং আমীর বানানো কোন অবস্থাতেই জায়েয ও বৈধ হবে না। কেননা তাকে এরকম এতবড় খেদমতের জিম্মাদার ও আমীর বানানো হলে সে পুরো জাতীকে বিপদগামী ও পথভ্রষ্ট করবে। তাই তাবলীগ ও দাওয়াতের সাথে জড়িত সাথীদের নিরপেক্ষভাবে বুঝা উচিত যে, সে প্রথমে তাবলীগ ও দাওয়াতের অনেক পুরাতন মুরুব্বীদের (হযরত মৌলানা ইব্রাহীম দেওলা, হযরত মৌলানা আহমদ লাট, হযরত মৌলানা ইয়াকুব সাহেব দা: বা: ইত্যাদির) সাথে বেয়াদবী করেছে এবং বিশ্ব তাবলীগের মারকাজ নেজামুদ্দীন বাংলা ওয়ালী মসজিদ থেকে বিতাড়িত করেছে। তাই এরকম একজন জঘন্য বেয়াদব ও বিতর্কিত ব্যক্তিকে কিভাবে বিশ্ব তাবলীগের আমীর বানানো জায়েয ও বৈধ হবে। বিশেষ করে যখন সে কোরআন হাদীসের মনগড়া তাফসীর করতেছে এবং কুরআন-হাদীসের পরিপন্থি অনেক কথাবার্তা বলতেছে। যার কিছু বর্ণনা কওমী মাদ্রাসার মূল কেন্দ্র দারুল উলূম দেওবন্দ ভারত (أم المدارس القومية دار العلوم ديوبند) এর ফতওয়ার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে তার আরো অনেক কিছু কুরআন-হাদীসের বিরোধী কথাবার্তা সম্বলিত বই-পুস্তক ঊর্দূ ও বাংলা ভাষায় আমাদের কাছে পৌঁছেছে। তাই আমরা আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার ফতওয়া বিভাগের মুফতিয়ানে কেরাম তাকে বিশ্ব তাবলিগ ও দাওয়াতের আমীর হিসেবে সমর্থন করতে পারিনা এবং জায়েযও মনে করি না।
শরয়ী প্রমাণাদী
سورة النساء الاية: 58
إن الله يأمركم أن تؤدوالأمانات إلى أهلها وإذا حكمتم بين الناس أن تحكموا بالعدل أن الله نعما يعظكم به أن الله كان سميعا بصيرا.
صحيح البخارى: 1/14
حدثنامحمد بن سنان….عن أبى هريره رضى الله عنه قال بينما النبى صلى الله عليه وسلم فى مجلس يحدث لاقوم جاء أعرابى قال متى الساعة فمضى صلى الله عليه وسلم يحدث وقال بعض القوم سمع ماقال فكره وقال بعضهم بل لم يسمع حتى إذاقضى حديثه قال أين أراه السائل عن الساعة فقال ها أنا يا رسول الله قال فإذا ضيعت الأمانة فانتظر الساعة قال كيف إضاعتها قال إذا وسد الأمر إلي غير أهله فانتظر الساعة.
الإرشاد إلى صحيح الإعتقاد: 1/208
عن أبى هريرة رضى الله عنه قال بينما النبى صلى الله عليه وسلم فى مجلس يحدث القوم جاء أعرابى قال متى الساعة فمضى رسول صلى الله عليه وسلم يحدث وقال بعض القوم سمع ماقال وقال بعضهم بل لم يسمع حت إذا قضى حديثه قال أين السائل فقال ها أنا يا رسول صلى الله عليه وسلم قال فإذا ضيعت الامانة فانتظر الساعة قال كيف إضاعتها قال إذا وسد الأمر إلى غير أهله فانتظر الساعة.
سنن الترمذى 2/132
حدثنا محمود بن غيلان نابشر بن السرى نا سفيان عن عبد الأعلى عن سعيد بن جبير عن ابن عباس رضى الله تعالى عنه قال قال رسول صلى الله عليه وسلم من قال فى القرآن بغير علم فاليتبوأ مقعده من النار وقال الامام الترمذى هذا حديث حسن صحيح.
شرح السنة : 1/144
عن ابن عباس رضى الله تعالى عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال من قال فى القرآن برأيه فاليتبوأ مقعده من النار . وفى رواية من قال فى القرآن برأيه فأصاب فقد أخطأ.
জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার ফতওয়া বিভাগের মুফতিয়ানে কেরামগণের স্বাক্ষর:-
১) হযরত আল্লামা মুফতি হা: আহমদুল্লাহ সাহেব দা: বা: (প্রধান মুফতি ও মুহাদ্দিস)
২) হযরত আল্লামা মুফতি শামছুদ্দীন জিয়া সাহেব দা: বা: (মুহাদ্দিস ও বিভাগীয় প্রধান)
৩) হযরত মাওলানা মুফতি হা: জসিম উদ্দীন কাসেমী সাহেব দা: বা: (তত্ত্বাবধায়ক: ফতওয়া বিভাগ)
৪) হযরত মাওলানা মুফতি মানজুর সিদ্দিকী সাহেব দা: বা: (তত্ত্বাবধায়ক: ফতওয়া বিভাগ)
জামিয়া পটিয়ার মূল ফতওয়া দেখুন-
(ফতওয়া ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন)
দারুল উলুম দেওবন্দের মূল ফতওয়া দেখুন-
(ফতওয়া ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন)
বাংলাদেশ,ভারত ও অন্যান্য দেশের অসংখ্য ফতওয়া দেখুন-