জামিয়া পটিয়ায় শিক্ষকমণ্ডলীর সাধারণ সভা

জামিয়া পটিয়ায় শিক্ষকমণ্ডলীর সাধারণ সভায়গৃহিত সিদ্ধান্তবলী

গত ২১ শে জিলকদ ১৪৩৯ হিজরী, মোতাবেক ৪টা আগষ্ট ২০১৮ খৃষ্টাব্দ রোজ শনিবার বাদে মাগরিব জামিয়ার মেহমানখানায় শিক্ষকমণ্ডলী ও কমর্চারীদের এক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সভাপতির আসন অলঙ্কিত করেন জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার মুহতামিম বিশিষ্ট ইসলামী গবেষক ও আলোচক আল্লামা মুফতি আব্দুল হালিম বোখারী হাফিজাহুল্লাহ। উপস্থিত ছিলেন জামিয়ার প্রবীণ মুহাদ্দিস মুফতি আহমদুল্লাহ হাফিজাহুল্লাহ, মুফতি শামসুদ্দিন জিয়া হাফিজাহুল্লাহ সহ জমিয়ার অন্যান্য মুহাদ্দিস ও শিক্ষকমণ্ডলী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মচারীগণ।

আল্লামা বোখারী হাফিজাহুল্লাহ আলোচনার শুরুতে পবিত্র কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াত;

وَقُلِ اعْمَلُوا فَسَيَرَى اللَّهُ عَمَلَكُمْ وَرَسُولُهُ وَالْمُؤْمِنُونَ

(অনুবাদ: হে নবী আপনি বলুন, তোমরা কাজ চালিয়ে যাও, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল এবং মু’মিনগণ তা অবশ্যই পর্যবেক্ষণ করবেন, তাওবা-১০৫)

 এবং নিম্নের হাদিস শরিফটি পাঠ করেন।

عَنْ ابْنِ عُمَرَ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ أَلَا كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ

(অনুবাদ: হযরত ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, জেনে রাখ, তোমরা সকলেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককেই নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে, (তিরমিযী শরিফ, হাদিস নং-১৬২৭)

অতঃপর তিনি বলেন, এখন বছরের শুরু, তাই আমাদেরকে এখন থেকে পুরো বছরের প্রস্তুতি নিতে হবে। ছাত্রদের শিক্ষা-দিক্ষা, তা’লীম-তরবিয়্যত উভয় দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বিশেষত ছাত্রদের তরবিয়্যতের দিকে আমাদেরকে বেশী লক্ষ্য রাখতে হবে। আমাদের অনেক হোস্টেল তত্ত্বাবধায়ক রয়েছেন। তা সত্ত্বেও কিছু কিছু ছাত্র রাত্রী-নিশীতে এদিক-সেদিক ঘুরাফেরা করছে। ছাত্ররা পড়া-লেখায় অন্যমনষ্ক হয়ে বিলাসীতার প্রতি মনোনিবেশ করছে। তাই আমি সকল দায়িত্বশীলকে অনুরোধ করব আপনারা বেতন-ভাতার দিকে না তাকিয়ে দীনের খেদমত মনে করে ছাত্রদের তত্ত্বাবধান করবেন এবং শিক্ষকমণ্ডলীর খিদমতে আরজ, যেন সকল শিক্ষক সদা দরসে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করেন এবং মাসিক দুই দিন ছুটির অতিরিক্ত অনুপস্থিত না থাকেন। 

একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সকলের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে,  জামিয়ার কোন ভূমি অনুমতিবিহীন কোন শিক্ষক-কর্মচারী ব্যবহার করবেন না এবং জামিয়ার পুকুরের মাছ ও ফলফলাদি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য সূলভ মূল্যে বিক্রির ব্যবস্থা রয়েছে। এগুলো বিক্রি করার জন্য মাওলানা আনিসুল হক সাহেবকে যিম্মাদারী দেয়া হয়েছে। সুতরাং তাকে জানিয়ে সেগুলো গ্রহণ করবেন।

গৃহিত সিদ্ধান্তবলী:

উক্ত বৈঠকে নিম্নের গুরুত্বর্পূণ সিদ্ধান্তবলী গৃহিত হয়।

এক. সকলের পরামর্শক্রমে আগামী ৩রা জিলহজ্জ্ব ১৪৩৯ হিজরী মোতাবেক ১৪ই আগষ্ট ২০১৮ খৃষ্টাব্দ রোজ মঙ্গলবার দরস শেষে জামিয়ার সকল বিভাগে কুরবানীর ছুটি ঘোষণা করা হবে এবং আগামী ২০ শে জিলহজ্জ্ব ১৪৩৯ হিজরী মোতাবেক পহেলা সেপ্টেম্বর ২০১৮ রোজ শনিবার জামিয়ার সকল বিভাগে যথা নিয়মে দরস আরম্ভ হবে ইনশা আল্লাহ।

দুই. কুরবানীর ছুটি উপলক্ষে সদকা ফান্ডের ছাত্ররা ১৫০০ (পনেরশ টাকা) খোরাকী আদায় করবে।

তিন. বিগত কয়েক বছরের ন্যায় এই বছরও জামিয়া কুরবানী চামড়া কালেকশন করবে না। কেউ স্বেচ্ছায় দিতে চাইলে জামিয়ার পক্ষ থেকে তা গ্রহণ করবেন মাওলানা জামালুদ্দিন সাহেব ও মাওলানা শহিদুল্লাহ সাহেব।

চার. ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮ ঘটিকায় এবং আলোচনা করবেন হাফেজ আহমদুল্লাহ হাফিজাহুল্লাহ/মুফতি শামসুদ্দিন জিয়া হাফিজাহুল্লাহ এবং ইমামতি করবেন মাওলানা আবু তাহেব নদভী হাফিজাহুল্লাহ।

পাঁচ. জামিয়া পাহারাদারীর জন্য নির্বাচিত ৩০ জন ছাত্র রাখা হবে। দরখাস্তের মাধ্যমে ছাত্র নির্বাচন করবেন মাওলানা হাফেজ ফোরকান হাফিজাহুল্লাহ।

ছয়. এই বছরের সভা ইনশা আল্লাহ ৭ ও ৮ ই ফেব্রুয়ারী ২০১৯ খৃষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত হবে এবং ২০২০ সালের সভার তারিখ নির্ধারণ করা হয় আগামী ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০ খৃষ্টাব্দ।

পরিশেষে আল্লামা বোখারী হাফিজাহুল্লাহ বলেন, আমি শারিরিকভাবে খুবই অসুস্থ। ডায়াবেটিস, প্রেসার, হার্ট ও কিডনি রোগে আক্রান্ত। বর্তমানে চোখের দৃষ্টিশক্তি একেবারেই কমে গেছে। চিকিৎসার উদ্দেশ্যে কুরাবানীর ছুটিতে ইন্ডিয়া যাওয়ার ইচ্ছা করেছি।  আমার অর্বতমানে জামিয়া পরিচালনার পূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন মুঈনে মুহতামিম মাওলানা আবু তাহের নদভী হাফিজাহুল্লাহ। আপনারা সকলেই তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন। আমার জন্য এবং জামিয়ার অসুস্থ সকল মুরব্বিদের সুস্বাস্থ্যের জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করছি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on skype
Skype
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সংবাদ

নোটিশ