পাকিস্তানের শীর্ষ আলেম ও ইসলামী ব্যক্তিত্ব আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার অন্যতম শূরা সদস্য আল্লামা ড. আবদুর রাজ্জাক ইসকান্দার রহ. বুধবার (৩০ জুন) সন্ধায় ইন্তিকাল করেন, ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
তাঁর ইন্তিকালে ‘আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া’র মুহতামিম ও শায়খুল হাদীস, আল্লামা মুফতি আব্দুল হালীম বোখারী (হাফিজাহুল্লাহ) গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি মরহুমের ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করে তাঁর মাগফেরাত কামনা করেন।
উল্লেখ্য যে, আল্লামা ড. আবদুর রাজ্জাক ইস্কান্দার রহ. করাচির বিখ্যাত ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়া বানুরী টাউন-এর শায়খুল হাদীস ও পরিচালক ছিলেন। এছাড়াও তিনি পাকিস্তানের মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ‘বেফাকুল মাদারিসিল আরবিয়া পাকিস্তান’-এর সভাপতি ও তাহাফফুজ খতমে নবুওয়াতের প্রধান ছিলেন।
আল্লামা ড. আবদুর রাজ্জাক ইস্কান্দার রহ. ১৯৩৫ সালে অ্যাবোটাবাদের কাকুল এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। দারুল উলুম করাচিতে প্রাথমিক পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯৫৬ সালে জামিয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়া বানুরী টাউন-এ দাওরায়ে হাদীস সম্পন্ন করেন। ১৯৬২ সালে মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও ১৯৭২ সালে মিসরের বিখ্যাত আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহণ করেন। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাঁর বেশ কয়েকটি বই রয়েছে। তিনি ফারেগ হওয়ার পূর্বেই ১৯৫৫ সাল থেকে জামিয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়া বানুরী টাউনে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। আল্লামা ইউসূফ বানুরী রহ. তাঁর মেধা ও আরবি সাহিত্যের পাণ্ডিত্য দেখে পাঠ সমাপ্ত করার পূর্বেই শিক্ষকতার সুযোগ দান করেন। তখন থেকে নিয়ে মৃত্যু অবধি তিনি সেখানে শায়খুল হাদীস ও মুহতামিমসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সুনামের সাথে পালন করে যান।
আল্লামা বোখারী (হাফিজাহুল্লাহ) বলেন, আল্লামা ড. আব্দুর রাজ্জাক ইস্কান্দার রহ. একজন বিজ্ঞ হাদীস বিশারদ ও দক্ষ আরবি সাহিত্যিক ছিলেন। আল্লাহওয়ালা এ মনীষীর গ্রহণযোগ্যতা ছিলো সর্বস্তরের মানুষের কাছে। তিনি আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার অন্যতম শূরা সদস্য ছিলেন। তাঁর দুআ ও পরামর্শ জামিয়ার উন্নতি ও অগ্রগতিতে বড় ভূমিকা রয়েছে। তাঁর ইন্তিকালে ইসলামী অঙ্গণে যে শূণ্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা সহজে পূরণ হবার নয়। আমরা (‘আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া’র সকল শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্রবৃন্দ) জামিয়ার এমন অভিভাবক ও হিতাকাঙক্ষীকে হারিয়ে গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত।
আমরা তাঁর মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, তাঁর ছাত্র ও ভক্ত-অনুরক্ত এবং শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমাবেদনা জানাচ্ছি।
মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে ফরিয়াদ, তিনি তাঁর দীনি খেদমতগুলো কবুল করেন এবং জান্নাতুল ফিরদাউসের সু-উচ্চ মাকামে সমাসীন করেন, আমীন।