ইলমী দক্ষতার পাশাপাশি আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জন করুন
(উচ্চতর বিভাগসমূহের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে জামিয়া প্রধান)
গত ০৫/০৯/২০২৪ ইং. বাদে মাগরিব জামিয়ার ইসলামি আইন ও গবেষণা বিভাগের শ্রেণীকক্ষে জামিয়ার সকল উচ্চতর বিভাগসমূহের ছাত্রদের উদ্দেশ্যে এক তারবিয়াতি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জামিয়া প্রধান মুফতি আবু তাহের কাসেমী নদভী হাফি.।
তিনি ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন, হে আমার প্রিয় শিক্ষার্থীরা! তোমরা হলে জামেয়ার সারনির্যাস। আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তোমরাই আগামী দিনে দেশ ও জাতির কান্ডারী হবে। কেউ শাইখুল হাদিস হিসেবে, কেউ মুহতামিম হিসেবে, কেউ শিক্ষক হিসাবে আবার কেউ উম্মার কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করার মাধ্যমে।
যেভাবেই হোক তোমাদেরকে যেহেতু দেশ ও জাতির সেবা করতে হবে তাই তোমাদেরকে সেই প্রস্তুতি নিয়েই এখান থেকে বের হতে হবে। হয়তো তোমরা এখানে তোমাদের শিক্ষকমন্ডলির উপস্থিতিতে নিজেদেরকে তুচ্ছ মনে করছো, এরকম মনে করাই উচিত। তবে মনে রাখবে, এখান থেকে যখন তোমরা বের হবে, তখন তোমরাই দেখতে পাবে যে, উম্মার কল্যাণে তোমাদেরকেই কাজ করতে হচ্ছে। তোমরা এখানে জামিয়ার অভ্যন্তরে যতদিন থাকবে, নিজেদেরকে ছোট মনে করবে, বিনয়ী প্রদর্শন করবে। এটা তোমাদের জন্য জরুরী। কিন্তু যখন এখান থেকে বের হয়ে যাবে, তখন উম্মার যত ধরনের প্রয়োজন দেখা দিবে, তা তোমাদেরকেই পূর্ণ করতে হবে।
জামিয়া প্রধান বলেন, আজ আমি তোমাদেরকে আল্লামা ইয়াকুব নানুতবী রঃ-এর সেই ঐতিহাসিক উক্তি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, যা তিনি থানভী রহ .-কে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন,
جب تم باہر نکلوگے تو تم ہی تم نظر آوگے
তোমাদেরকে আজ আমি কয়েকটি নসিহত করব;
এক. ইলমী পারদর্শিতা অর্জনের পাশাপাশি আধ্যাত্মিকতাকে মজবুত করবে। এজন্য কোন আল্লাহওয়ালার হাতে নিজেদেরকে সোপর্দ করবে। নিজের আত্মাকে সংশোধনের জন্য কারো হাতে বায়াত গ্রহণ করবে।
আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের জামিয়া পটিয়াতে অনেক আল্লাহওয়ালা আছেন। যাকে ইচ্ছা নিজের পথপ্রদর্শক হিসেবে গ্রহণ করে নিবে। এক্ষেত্রে থানভী রহ. রচিত “কসদুস সাবীল”-এর সহায়তা নিতে পারো। সেখানে আল্লাহওয়ালার যে পরিচয় দেয়া আছে, তা যার মধ্যে বিদ্যমান আছে তার হাতে বায়াত গ্রহণ করবে।
দুই. শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদ, জিকির ও দোয়ার প্রতি মননিবেশ করবে।
মনে রাখবে, আমাদের জামিয়াকে চোখের পানির মাদ্রাসা বলা হয়। এই জামিয়ার প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা মুফতি আজিজুল হক রহ.-এর চোখের পানির বদৌলতে এই জামিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অতএব, জামিয়াকে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য চোখের পানির বিকল্প নেই।
তাই তোমাদেরকে বলবো, আজ থেকে সকলেই মেহমানখানায় গিয়ে জিকিরের হালকায় বসবে এবং দোয়ায় শরীক থাকবে।
জামিয়া প্রধানের এমন আবেগঘন বক্তব্যে সকল শিক্ষার্থী আবেগ আপ্লুত হয়। হযরতের নসিহতগুলো পালন করার জন্য সকলেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ওয়াদাবদ্ধ হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইফতা বিভাগের যিম্মাদার মাওলানা মুফতি মনজুর সিদ্দিক, তাফসীর বিভাগের যিম্মাদার মাওলানা সলিমুদ্দিন মাহদী কাসেমী, আরবি সাহিত্য বিভাগের যিম্মাদার মাওলানা মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ, উলুমুল হাদিস বিভাগের যিম্মাদার মাওলানা তাকী হাফি.।