চন্দ্রঘোনা ইউনুছিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মূসা রহ.-এর ইন্তিকালে জামিয়া প্রধানের গভীর শোক প্রকাশ
রাঙ্গুনিয়া থানাধীন ‘আল-জামিয়াতু কোরআনিয়া আজীজুল উলূম ইউনুছিয়া চন্দ্রঘোনা মাদরাসা’র মুহতামিম, কর্মঠ ও মেধাবী আলেমে দীন, মাওলানা মূসা রহ.-এর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার সম্মানিত মুহতামিম আল্লামা মুফতি আব্দুল হালীম বোখারী (হাফিজাহুল্লাহ)।
উল্লেখ্য যে, তিনি গত ২৬শে জুন ২০২০ খৃষ্টাব্দ মোতাবেক ৪ঠা জিলকদ ১৪৪১হিজরী বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২.৩০ মিনিটে প্রভুর সান্নিধ্যে গমন করেন, ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। জুমাবার বিকাল ৩টায় তার একমাত্র সুযোগ্য সন্তান হাফেজ মাওলানা মরগুবুর রহমান এর ইমামতিতে জানাযার নামায অনুষ্ঠিত হয়। অতঃপর উক্ত মাদরাসার কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন পশ্চিম পাশে তাকে দাফন করা হয়।
গণমাধ্যমে দেয়া এক শোকবার্তায় আল্লামা বোখারী বলেন, মাওলানা মূসা রহ. ছিলেন আমার প্রিয় ছাত্র। তিনি জামিয়া পটিয়ায় দাওরায়ে হাদিস পড়াকালীন সময়ে অত্যন্ত সুন্দর ও শুদ্ধভাবে হাদীসের ইবারত পড়তেন। তার ইবারত পাঠে বিমুগ্ধ হতো সকল উস্তাদ-মুহাদ্দিস। তিনি তার আদব ও শিষ্টাচার, খেদমাত ও সেবার মাধ্যমে শিক্ষকমণ্ডলীর নৈকট্য অর্জন করতে সক্ষম হয়ে ছিলেন। খোদাপ্রদত্ত প্রতিভা ও নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে জামিয়া পটিয়ার শীর্ষ মেধাতালীকায় নিজের স্থান করে নিয়েছিলেন।
জামিয়া থেকে ফারেগ হওয়ার পর তাকে ‘জামিয়া টেকনাফ’-এ শিক্ষক হিসেবে পাঠিয়ে ছিলাম। সেখানে খুবই সুনামের সাথে কয়েক বছর পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন। অতঃপর রাঙ্গুনিয়া কোদালা মাদরাসায় দীর্ঘদিন যাবত খেদমাত আঞ্জাম দিয়ে যান। পরবর্তীতে চন্দ্রঘোনা ইউনুছিয়া মাদরাসার সঙ্কটময় অবস্থায় তাকে মুহতামিম হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তিনি তাঁর নিরলস প্রচেষ্টা, আত্মত্যাগ, কর্মকৌশল ও কর্মদক্ষতার মাধ্যমে মাদরাসাটিকে উন্নতির শীর্ষে উপনিত করেন। স্বল্প সময়ে তিনি মাদরাসার আকাশচুম্বী অট্টালিকা ও নতুন আঙ্গিকে ভবন-নির্মাণের মাধ্যমে রচনা করলেন মুসলিম স্থাপত্যশিল্পের এক গৌরবময় নিদর্শন।
শিক্ষার্থীদের পড়া-লেখা ও শিক্ষা-দীক্ষায় মাদরাসাটিকে পরিণত করেন একটি আদর্শ মাদরাসায়। বর্তমানে ‘আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস’ (কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডে)-এর উল্লেখযোগ্য মাদরাসারসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো চন্দ্রঘোনা ইউনুছিয়া মাদরাসা। এই মাদরাসার সার্বিক উন্নতি-অগ্রগতির পেছনে মাওলানা মূসা রহ. এর ভূমিকা ও অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি খুবই সামাজিক, উদার, বিনয়ী ও অতিথিপরায়ণ ছিলেন। তিনি যে কোন বিষয়ে আমার কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করে চলতেন। তার আচার-ব্যবহার, আদব-শিষ্টাচার ও ভক্তি-ভালোবাসায় সদা অন্তর প্রশান্তি অনুভব করতো। তার মৃত্যুতে সত্যিই আমরা জামিয়া পটিয়ার ছাত্র-শিক্ষক সকলেই শোকাহত ও মর্মাহত।
আমরা তার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, ছাত্র-অনুরক্ত এবং সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
হে আল্লাহ, দয়া করে তার খেদমাতগুলো কবুল করুন, তার প্রতিষ্ঠানের জন্য উত্তম কার্যনির্বাহির ব্যবস্থা করুন এবং তার ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করুন, আমীন।