বিপদ-আপদে মু’মিনের করণীয়!

বিপদ-আপদে মু’মিনের করণীয়

[মাওলানা কাজী আখতার হোসাইন আনোয়ারীর সহধর্মীনির জানাযায়  আল্লামা মুফতি আব্দুল হালীম বোখারীর শান্তনামূলক বক্তব্যের সারনির্যাস]

نحمده ونصلى على رسوله الكريم…

امابعد!

فاعوذبالله من الشيطان الرجيم. بسم الله الرحمن الرحيم كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ. وقال تعالى: وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُم مُّصِيبَةٌ قَالُوا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ. صدق الله العظيم.

উপস্থিত সম্মানিত ওলামায়ে কিরাম ও বেরাদারানে ইসলাম!

আল্লাহ পাকের ফয়সালা, গতকাল ২রা রবিউস সানী ১৪৪০ হিজরী মোতাবেক ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ খৃষ্টাব্দ রোজ রোববার রাত এগারটার সময় আমাদের জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার সিনিয়র শিক্ষক স্নেহস্পদ মাওলানা কাজী আখতার হোসাইন আনোয়ারী – সাল্লামাহু রব্বুহু- তার সহধর্মীনি ইন্তিকাল করেছেন, ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন বয়স তেমন বেশী হয়নি। চার মেয়ে ও এক ছেলের জননী।  বড় মেয়ের বয়স মাত্র ১৪ বছর।  ছোট মেয়ে ভূমিষ্ট হওয়ার পর তিনি মারা যান। আমরা সকলেই তার মাগফিরাত কামনা করছি এবং দোয়া করছি আল্লাহ যেন তাকে জন্নাতুল ফিরদাউস নসীব করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনকে সবরে জামীল দান করেন, আমীন।

মৃত্যু আকষ্কিক নয় নির্দিষ্ট সময়ে হয়:

আমাদের দেশে একটি কথা প্রচলিত আছে, যখন কম বয়সে কোন মানুষ মারা যায় তখন মানুষ তাকে আকষ্মিক মৃত্যু বলে। কিন্তু আমরা মুসলমান হিসাবে এই বিশ্বাস রাখতে হবে যে, মৃত্যু কোন সময় আকষ্মিক হয় না বরং মৃত্যু সবসময় নির্ধারিত সময়েই হয়ে থাকে। কেননা, বুখারী শরীফের একটি হাদীসের বর্ণনায় এসেছে।  সেখানে বলা হয়েছে মানুষ যখন মায়ের পেটে থাকে তখনই আল্লাহ তা’আলা নির্ধারণ করে দেন যে, এই ছেলে-মেয়ে পৃথিবীতে কত দিন থাকবে এবং কি খাবে? কি করবে? সকল বিষয় মায়ের পেটেই সিদ্ধান্ত হয়।  যতদিন বেঁচে থাকা ভাগ্যে লেখা থাকে তা অতিবাহিত হওয়ার পরপরই ইহকাল ত্যাগ করে থাকে।  সুতরাং, কোন মৃত্যুই আকষ্কিক হয় না, বরং সবকিছুই পরিকল্পিতভাবে হয়ে থাকে।  অতএব, আল্লাহ তা’আলার গ্যাজেট অনুযায়ীই সবকিছু হয়।

عن عبد اللّه بن مسعود قال‏:‏ حدثنا رسول اللّه صلى الله عليه وسلم وهو الصادق المصدوق‏:‏”إن أحدكم يجمع خلقه في بطن أمه أربعين يومًا نطفة، ثم يكون علقة مثل ذلك، ثم يكون مضغة مثل ذلك، ثم يرسل إليه الملك فينفخ فيه الروح، ويؤمر بأربع كلمات‏:‏ بكتب رزقه، وأجله، وعمله، وشقي أو سعيد‏.‏ فوالذي لا إله غيره إن أحدكم ليعمل بعمل أهل الجنة ،حتى ما يكون بينه وبينها إلا ذراع، فيسبق عليه الكتاب، فيعمل بعمل أهل النار فيدخلها، وإن أحدكم ليعمل بعمل أهل النار ،حتى ما يكون بينه وبينها إلا ذراع، فيسبق عليه الكتاب، فيعمل بعمل أهل الجنة فيدخلها‏” متفق عليه

 ‏‏অনুবাদ: আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলেছেন- তোমাদের প্রত্যেককে তার মায়ের পেটে চল্লিশ দিন পর্যন্ত শুক্রানু আকারে জমা রাখা হয়। অতঃপর তা রক্তপিণ্ডে পরিণত হয়ে এই পরিমাণ (৪০ দিন) সময় থাকে। পরে তা মাংসপিণ্ড আকারে অনুরূপ সময় ( ৪০ দিন) জমা রাখা হয়। অতঃপর একজন ফেরেশতা পাঠানো হয়। তিনি তাতে আত্মা ফুঁক দেন। তখন তাকে ( ওই ফেরেশতাকে ) চারটি বিষয় লেখার আদেশ করা হয়। তাহলো, তার রিযিক, তার হায়াত, তার আমল ও সে দুর্ভাগ্যবান হবে অথবা সৌভাগ্যবান। সেই সত্তার শপথ যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই তোমাদের কেউ জান্নাতবাসীদের আমল করবে, এমনকি তার ও জান্নাতের মাঝে মাত্র একহাত ব্যবধান থাকবে, অতঃপর তার কিতাবের লিখন সামনে এসে উপস্থিত হবে, নিয়তি আগে বেড়ে যাবে। ফলে সে জাহান্নামীদের আমল করবে এবং তাতে প্রবেশ করবে। আর তোমাদের কেউ জাহান্নামীদের কাজ করবে, এমনকি তার মাঝে ও জাহান্নামের মাঝে মাত্র একহাত ব্যবধান থাকবে। অতঃপর তার কিতাবের লিখন সামনে এসে উপস্থিত হবে (নিয়তি আগে বেড়ে যাবে) ফলে সে তাতে প্রবেশ করবে।  (বোখারী শরীফ, হাদিস নং (৩২৩)

সর্বোত্তম শান্তনা:

বিভিন্ন কিতাবের বর্ণনায় এসেছে, সাতটি জিনিস আশ্চর্জজনক।  তা থেকে একটি হল, মৃত্যু আসবে সেটা সকলেই জানে তবে তার জন্য প্রস্তুতি নেয় না।  আরেকটি হল, ভাগ্যে যা লিখা আছে তা অবশ্যই হবে।  তার পরেও মুসিবত আসলে মানুষ শোকাহত হয়। হযরত আব্বাস রা. রাসূলের চাচা ছিলেন। তাঁর ছেলে আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা. বড় মুফাসসির ও সাহাবী ছিলেন। যখন হযরত আব্বাস রা. ইন্তিকাল করেন তখন আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা. শোকাহত হন এবং খুবই অস্থির হয়ে যান। তখন একজন গ্রাম্যলোক তাকে দেখতে আসেন।  [গ্রামে অনেক পণ্ডিত থাকেন, অনেক কবি-সাহিত্যিক বসবাস করেন। তাদের ভাষাও বিশুদ্ধ হয়ে থাকে। শহরের মানুষের ভাষা মিশ্রিত হয়ে যায় বিভিন্ন ভাষায় কথা বলার কারণে] অতঃপর ঐ গ্রাম্য লোকটি এসে হযরত আব্দুল্লাহ রা. কে বলেন, ধৈর্যধারণ করুন, আমরাও আপনার সাথে ধৈর্যধারণ করবো। কেননা, আপনি আমাদের সরদার। আপনি ধৈর্য ধারণ করলে আমরাও আপনার সাথে ধৈর্য ধারণ করবো।

‏روي أن العباس رضي الله عنه لما توفي قعد ابنه عبد الله رضي الله عنه للتعزية فدخل الناس أفواجاً يعزونه فكان فيمن دخل أعرابي فأنشده:

اصبر نكن بك صابرين فإنما … صبر الرعية بعد صبر الرأس
خير من العباس أجرك بعده … والله خير منك للعباس
فقال ابن عباس: ماعزّاني أحد تعزية الأعرابي‏

আব্বাস চলে গেছেন আল্লাহর কাছে।  আপনার জন্য আব্বাস চলে যাওয়ার পর ধৈর্য ধারণ করা উত্তম।  আর আব্বাসের জন্য আপনার চেয়ে উত্তম হল আল্লাহ।(অর্থাৎ আপনার জন্য ধৈর্য ভাল আর আব্বাসের জন্য আল্লাহ ভাল) অতঃপর হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা. বলেন, এই গ্রাম্য লোকের মত করে অন্য কেউ আমাকে সান্তনা দিতে পারেনি।

ধৈর্যধারণকারীর পুরষ্কার:

সে দিন একটি কিতাবে পেলাম, কিয়ামতের দিন একদল ফেরেস্তা ডাক দিয়ে বলবেন। اين الصابرون في المصائب؟ যে সকল লোকেরা মুসিবতে সবর করেছ তারা কোথায়? দাঁড়াও।  অনেক লোক দাঁড়াবে তখন। আর ঐ ফেরাস্তা তাঁদেরকে জান্নাতে নিয়ে যাবেন। জন্নাতের সিকিউরিটিকে ডেকে বলবে দরজা খোল।  তিনি জিজ্ঞাসা করবেন, কেন খুলবো? এখনো তো কারো হিসাব-নিকাশ হয়নি। তখন তিনি তাকে আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করতে বলবেন। আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করলে আল্লাহ বলবেন, আমি ধৈর্যধারণকারীদেরকে বিনা হিসাবে জান্নাত দেয়ার ঘোষণা দিয়েছি। (সুব’হানাল্লাহ)

عن عبدالله بن عمرو- رضي الله عنهما- قال: قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم -:”إذا جمع الله الخلائق يوم القيامة، نادى مناد: أين أهل الفضل؟ فيقوم ناس وهم يسيرون، فينطلقون سراعًا إلى الجنة، فتتلقاهم الملائكة فيقولون: إنا نراكم سراعًا إلى الجنة، فمن أنتم؟! فيقولون: نحن أهل الفضل. فيقولون: وما فضلكم؟ فيقولون: كنا إذا ظلمنا صبرنا، واذا أسيء إلينا عفونا، وإذا جهل علينا حلمنا فيقال لهم: ادخلوا الجنة فنعم أجر العاملين. قال: ثم ينادي مناد: أين أهل الصبر، فيقوم ناس وهم يسيرون فينطلقون إلى الجنة سراعًا، فتلقاهم الملائكة، فيقولون: إنا نراكم سراعًا إلى الجنة؟ فمن أنتم؟! فيقولون: نحن أهل الصبر. فيقولون: وما صبركم؟ فيقولون: كنا نصبر على طاعة الله- عز وجل- وكنا نصبر عن معاصي الله. فيقال لهم: ادخلوا الجنة، فنعم أجر العاملين. قال: ثم ينادي مناد: أين المتحابون في الله- أو قال: في ذات الله؟ فيقوم ناس وهم يسير، فينطلقون سراعًا إلى الجنة، فتتلقاهم الملائكة فيقولون: إنا نراكم سراعًا إلى الجنة، فمن أنتم؟ فيقولون: نحن المتحابون في الله- أو في ذات الله- فيقولون: وما كان تحابكم؟ فيقولون: كنا نتحاب في الله- عز وجل- ونتزاور في الله، ونتعاطف في الله أو نتباذل في الله، فيقال لهم: ادخلوا الجنة فنعم أجر العاملين. قال النبي – صلى الله عليه وسلم -: ويضع الله الموازين للحساب بعدما يدخل هؤلاء الجنة .قال أحمد بن أبي بكر بن إسماعيل البوصيري في اتحاف الخيرة المهرة بزوائد المسانيد العشرة
: رواه أبويعلى الموصلي، وفي سنده العرزمي وهو ضعيف، واسمه محمد بن عبيدالله.

আল্লাহ সূরায়ে বাকারার ১৫৫-১৫৬ নং আয়াতে বলেন, যারা সবর করে তাঁদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদ রয়েছে। ধৈর্যধারণকারী ব্যক্তি হলো যারা মুসিবতের সময় ইন্না- লিল্লাহি ওয়া ইন্না- ইলাইহি রাজিউন বলেন।

 

জাহিলী প্রথা:

জাহিলী যুগে বিপদ-আপদে মানুষ নিজের কাপড় ছেঁড়ে ফেলতো, শরীর ছেদ করতো, মুখমণ্ডল নষ্ট করে ফেলতো।  ইসলাম আগমনের পরে ওসব প্রথা রহিত হয়ে গেছে। এই কাজকে শরিয়তের পরিভাষায় নাওহা বলা হয় অর্থাৎ কারো মৃত্যুতে চিৎকার করে কান্নাকাটি করা, শরীরে আঘাত করা, চুল ছেড়া, জামা-কাপড় ছেড়া …ইত্যাদি।  এসব কাজ করা ইসলামে হারাম ও নিষিদ্ধ।

বিপদ-আপদে ইসলামের শিক্ষা হল, মুসিবতের সময় সবর করতে হবে এবং ইন্না- লিল্লাহি ওয়া ইন্না- ইলাইহি রাজিউন বলবে। ইন্না লিল্লাহ অর্থ; আমরা সকলেই আল্লাহর জন্য। ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন অর্থ: তারা যেখানে গেছে আমাদেরকেও সেখানে যেতে হবে।  অর্থাৎ অস্থির হওয়ার কোন কারণ নেই, সে যেখানে গিয়েছে ঠিক আমাদেরকেও সেখানে যেতে হবে।

ধৈর্যের ফল মিষ্ট!

হজরত উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, একদিন আমার স্বামী আবু সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবার থেকে আমার নিকট আসেন এবং অত্যন্ত খুশী মনে বলেন, ‘আজ আমি এমন একটি হাদিস শুনেছি; যা শুনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। হাদিসটি হলো- যখন কোনো মুসলমানের ওপর কোনো কষ্ট বা বিপদ আসে এবং সে পড়ে-

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা আজিরনী ফি মুসীবাতী ওয়াখলুফ লী খাইরম মিনহা।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমার এ বিপদে আমাকে প্রতিদান দিন এবং আমাকে এর চেয়ে উত্তম বিনিময় প্রদান করুন।’ এ দোয়ার বরকতে তখন আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাঁর বান্দাকে উত্তম বিনিময় ও প্রতিদান দিয়ে থাকেন।  হজরত উম্মে সালামা বলেন আমি দোয়াটি মুখস্ত করি। অতঃপর হজরত আবু সালামার ইন্তেকাল হলে আমি ‌‘ইন্না- লিল্লাহি ওয়া ইন্না- ইলাইহি রাজিউন পাঠ করি এবং এ দোয়াটিও পড়ি।  কিন্তু আমার ধারণা হয় যে, আবু সালামা অপেক্ষা আর ভালো লোক আমি কাকে পাবো? আমার ইদ্দত অতিবাহিত হলে আমি একদিন একটি চামড়া সংস্কার করতে থাকি।  এমন সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আগমন করেন এবং ভেতরে প্রবেশের অনুমতি চান। আমি চামড়াটি রেখে হাত পরিষ্কার করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ভেতরে আসার আবেদন করি।  তাঁর জন্য নরম আসনে বসার ব্যবস্থা করি।

তিনি আমাকে বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।  আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! এটাতো আমার জন্য বড়ই সৌভাগ্যের কথা,।কিন্তু প্রথমত আমি একজন লজ্জাবতী নারী।  আমি আশংকা করছি, না জানি আমার দ্বারা আপনার মতের বিপরীত কোনো কাজ ঘটে যায় এবং এ কারণে আল্লাহ তাআলা আমাকে কোনো শাস্তি দেন কিনা! দ্বিতীয়ত আমি একজন বয়স্ক নারী।  তৃতীয়ত আমার ছেলে মেয়ে আছে।  তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, দেখ!‍ আল্লাহ তাআলা তোমার এ অনর্থক লজ্জা দূর করে দেবেন। আর বয়স আমারওতো কম নয় এবং তোমার ছেলে মেয়ে যেন আমারই ছেলে মেয়ে।

আমি এ কথা শুনে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই।  অতঃপর আল্লাহর নবির সঙ্গে আমার বিয়ে হয়ে যায়।  আর এ দোয়ার বরকতে আমি আমার পূর্ব স্বামী আবু সালামা অপেক্ষা উত্তম স্বামী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পেয়ে যাই।  সুতরাং সমুদয় প্রশংসা মহান আল্লাহ তাআলার জন্য।  (মুসনাদে আহমদ)

আজকে আমাদের আযীয (প্রিয়) মাওলানা আখতার সাহেব তার স্ত্রীকে হারিয়ে শোকাহত।  ব্যাথিত হওয়াটাই স্বাভাবিক।  রাসুলুল্লাহ সা. এর সন্তান ইব্রাহীম ইন্তিকাল হওয়ার পর রাসুলুল্লাহ সা. এর চোখ দিয়ে অশ্রু বের হতে লাগলো আর তিনি বললেন-

 إنابفراقك لمحزونون

ইবরাহীম তুমি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছো, আমরা পেরেশান। এক সাহাবী আব্দুর রহমান বিন আওফ রা. বলেন, হুজুর আপনি আল্লাহর রাসুল, আপনার চোখ থেকে অশ্রু কেন বের হচ্ছে? তখন রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, এটি আল্লাহর রহমত। আমি মানুষ হিসেবে চোখ থেকে অশ্রু বের হওয়া এবং অন্তর ব্যথিত হওয়া স্বাভাবিক বিষয়।

ويصف أنس بن بن مالك رضي الله عنه حال وموقف النبي صلى الله عليه و سلم عند لحظة موت ابنه إبراهيم فيقول: (دخلنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم على أبى سيف القَيْن (الحداد)، وكان ظِئْرًا لإبراهيم (أباً له من الرضاعة)، فأخذ رسول الله صلى الله عليه وسلم إبراهيم فَقَبَّلَهُ وَشَمَّهُ، ثم دخلنا عليه بعد ذلك، وإبراهيم يجود بنفسه، فجعلت عينا رسول الله صلى الله عليه وسلم ـ تذرفان، فقال له عبد الرحمن بن عوف: وأنت يا رسول الله؟! فقال: يا ابن عوف، إنها رحمة، ثم أتبعها بأخرى، فقال صلى الله عليه وسلم: إن العين تدمع، والقلب يحزن، ولا نقول إلا ما يرضى ربنا، وإنا بفراقك يا إبراهيم لمحزونون) رواه البخاري(.

অতএব, আমরা মুসলমান হিসেবে বিপদে-আপদে হতাশ না হয়ে মহান আল্লাহ তাআলার কাছে সাহায্য কামনা করবো।  কেননা, এটি মুমিন বান্দার একান্ত কর্তব্য।  আল্লাহ আমাদের সকলকে বুঝার এবং আমল করার তাওফীক দান করুন, আমীন।

সংকলন:

মুহাম্মদ সলিমুদ্দিন মাহদি কাসেমী

শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on skype
Skype
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সংবাদ

নোটিশ