ঈমান-আকীদা
সমস্যা: মুরব্বিদের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা যাবে কি না? কিছু আলেম বলে থাকেন, মুরব্বিদের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা যাবে, আর কিছু আলেম বলে থাকেন মুরব্বিদের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা যাবে না। এখন আমার জানার বিষয় হল, শরীয়তের মধ্যে এর হুকুম কী? আর যদি চাপের মুখে পড়ে এ রকম কদমবুচি করতে হয়, তাহলে এর হুকুম কী? ইসলামি শরীয়তের আলোকে জানিয়ে বাধিত করবেন।
জসিমুদ্দীন
ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম
শরয়ী সমাধান: স্মরণ রাখতে হবে যে, কারো পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা ইসলামিক পদ্ধতি নয় বরং বিজাতীয় পদ্ধতি ও হিন্দুয়ানি সংস্কৃতি। তাই তার থেকে দূরে থাকা একান্ত জরুরি। অবশ্য চাপের মুখে পড়ে করতে বাধ্য হলে মাথা নিচু না বরং মাথা উঁচু করে রাখবে। তাহলে গোনাহ না হওয়ার আশা করা যায়। তারপরও আল্লাহ তায়ালার নিকট তওবা করে নেওয়া উচিত।
তিরমিযী শরীফ ২/১০২, ফতওয়ায়ে আলমগিরী ৫/৩৬৯, আদ-দুররুল মুখতার ৬/৮৩, রদ্দুল মুহতার ৯/৫৫০
সমস্যা: প্রচলিত অনুষ্ঠান যা মৃত ব্যক্তির বাড়িতে করা হয়, যেমন চতুর্থ দিনে, চল্লিশতম দিনে এবং বছরের প্রথম দিনে নির্দিষ্টভাবে বা অনির্দিষ্টভাবে করা হয়, তা শরীয়তসম্মত কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।
সাদ্দাম হুসাইন
চকরিয়া, কক্সবাজার
শরয়ী সমাধান: শরীয়তে যে সমস্ত ইবাদতের জন্য কোনো সময় বা তারিখ নির্দিষ্ট করা হয়নি, ওই সকল ইবাদতের জন্য নিজের পক্ষ থেকে দিন তারিখ নির্দিষ্ট করা বিদআত। সুতরাং প্রশ্নোল্লিখিত প্রচলিত যে আয়োজন মৃত ব্যক্তির বাড়িতে করা হয়, তা বিদআত হবে। কেননা এখানে দিন তারিখ নির্দিষ্ট করে থাকে। তবে যদি দিন তারিখ নির্দিষ্ট না করে মৃত ব্যক্তির ইসালে সওয়াবের উদ্দেশ্যে শুধুমাত্র এতিম গরিবদের জন্য খানার আয়োজন করা হয় এবং উক্ত আয়োজনে নাবালেগ ও এতিমের টাকা না থাকে তাহলে জায়েয হবে। কিন্তু আমাদের সমাজে এ ধরনের অনুষ্ঠানে ব্যাপকভাবে শরীয়তের বিধান লঙ্ঘন করা হয় বিধায় তা করা যাবে না। বরং ইসালে সওয়াবের উদ্দেশ্যে মসজিদ ও মাদরাসায় দান করা বা এতিম গরিবদেরকে নগদ অর্থ প্রদান করা সবচেয়ে উত্তম পন্থা।
মিশকাত শরীফ ১/২৭-৩০, মুসলিম শরীফ ১/৩৬১, ইবনে মাজাহ হাদিস: ১৬৮০, রদ্দুল মুহতার ৩/১২৯, মারাকিল ফালাহ ৩৩৯, আল ফিকহুল ইসলামী ২/৫৪৯
সমস্যা: আমাদের দেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ইত্যাদি অমুসলিম সম্প্রদায় তাদের বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে হরেক রকমের জমকালো অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে, তাতে অনেক লোকসমাগম হয়। ইদানিং অনেক মুসলমানকেও সেখানে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। এখন জানার বিষয় হল, অমুসলিমদের এসব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মুসলমানদের যাওয়া ও তাতে অংশগ্রহণ করা মুসলমানদের জন্য কতটুকু বৈধ, শরয়ী আলোকে জানিয়ে বাধিত করবেন।
আফজাল হুসাইন
পটিয়া, চট্টগ্রাম
শরয়ী সমাধান: স্মরণ রাখতে হবে যে, হিন্দুদের বিভিন্ন পূজা উৎসব ও অমুসলিমদের ধর্মীয় উৎসব তাদের নিজস্ব আচার ও সংস্কৃতি। অতএব কোন মুসলমান তাতে অংশগ্রহণ করার অর্থ হলো তাদের সংস্কৃতি তথা তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করা। আর তা কুরআন ও হাদীসে সম্পূর্ণরূপে নিষেধ করা হয়েছে। সুতারাং তাদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করায় যেহেতু তাদেরকে সংখ্যার দিক দিয়ে সহযোগিতা ও তাদেরকে কুফরি কাজে সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে, তাই এমন অনুষ্ঠানে যাওয়া ও তাতে অংশগ্রহণ করা সম্পূর্ণ হারাম ও নাজায়েয।
সূরা মায়েদা:২, কানযুল উম্মাল ৫/১৮৪
বিভাগীয় নোটিশ
দৈনন্দিন জীবনের যেকোনো সমস্যার শরয়ী সমাধান জানতে আল-জামিয়া আল- ইসলামিয়া পটিয়ার ফতওয়া বিভাগে প্রশ্ন পাঠাতে পারেন। এজন্য সরাসরি যোগাযোগ বা বিভাগের জন্য নির্দিষ্ট ফোনে যোগাযোগ করুন। প্রশ্ন পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইল বা ফেসবুক ফ্যান-পেইজেও।
★ফতওয়া বিভাগ★
আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম।
ই-মেইল: daruliftapatiya@gmail.com
পেইজলিংক: @islamiclaw.patiya
ফোন নং: ০১৮৫৬৬১৮৩৬৭ ০১৭০৩৮৩৯৯৯৭
মুফতি আহমদুল্লাহ দা.বা. ০১৭১৫৫০১৫৪০
মুফতি শামসুদ্দীন জিয়া ০১৮১৯৬৬৫১১৩
মুফতি জসিম উদ্দীন দা. ০১৮১১৬১০৫৫৪
মুফতি মানযুর সিদ্দিক ০১৮১৯৯৮০৯৮৬