ফাতাওয়া-প্রশ্নোত্তর

ওয়াকফ-মসজিদ

সমস্যা: মসজিদ নির্মাণের ক্ষেত্রে অমুসলিমদের দান গ্রহণ করা যাবে কি না? এবং যে সকল মুসলিম হারাম টাকা উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের দান গ্রহণ করা যাবে কি না? শরীয়তের আলোকে জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

মুসা কালিম

চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা

শরয়ী সমাধান: অমুসলিমদের মসজিদ নির্মাণে টাকা ইত্যাদি দেওয়া মসজিদের জন্য তাদের অসিয়ত কিংবা মসজিদের জন্য কিছু ওয়াকফ করার সমতুল্য। আর তারা যদি এমন জিনিসের অসিয়ত করে যা তাদের নিকটও পুণ্যের কাজ আর আমাদের নিকটও পুণ্যের কাজ, তাহলে তাদের এই অসিয়ত এবং ওয়াকফ সহীহ এবং জায়েয আছে। সুতরাং কোনো অমুসলিম যদি মসজিদ করাকে সওয়াব এবং পুণ্যের কাজ মনে করে, তাহলে তার দান গ্রহণ করা যাবে। তবে এতে যদি কোনো ক্ষতির দিক থাকে, যেমন ভবিষ্যতে ফেতনার আশংকা থাকে, কিংবা পরে সে মালিকানা দাবি করতে পারে অথবা মুসলমানের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে- এরকম আশংকা থাকলে তার দান গ্রহণ করা যাবে না। তবে কোনো অমুসলিম যদি মসজিদে দান করতে চায় এবং উল্লিখিত এমন ক্ষতির সম্ভাবনাও না থাকে তখন উত্তম হল প্রথমে সে কোনো মুসলিমকে মালিক বানিয়ে দিবে আর সে মসজিদে তা দান করে দেবে।

কোনো ব্যক্তির আয়ের উৎস যদি হারাম হয়, তাহলে তার দান নেওয়া যাবে না। কেননা মসজিদের কাজে হারাম মাল ব্যবহার করা মাকরুহে তাহরীমী, যা হারামের নামান্তর। তবে সে যদি অন্য কারো থেকে হালাল টাকা ধার করে দেয়, সেগুলো নেওয়া যাবে। আর যদি তার টাকায় হালাল হারাম মিশ্রিত থাকে, তাহলে অধিকাংশ যদি হালাল হয়, নেওয়া যাবে। আর যদি অধিকাংশ হারাম হয়, নেওয়া যাবে না।

আদ-দুররুল মুখতার-শামী ২/৪৩১, ফতওয়ায়ে আলমগীরী ৬/১৩১, বাদায়েউস সানায়ে ৭/৩৪১

সমস্যা: আজ থেকে প্রায় ত্রিশ-চল্লিশ বছর পূর্বে টিলা পাড়া গ্রামবাসী একটি মসজিদ নির্মাণের ইচ্ছা পোষণ করলে আমার আব্বা মরহুম জনাব গোলামবারী হাজী মসজিদ নির্মাণের জন্য জমি দেন এবং সকলের সহযোগিতায় মসজিদ নির্মাণ করা হয়। তখন থেকে আজ পর্যন্ত সেই মসজিদে ৫ ওয়াক্ত নামায ও জুমার নামায চালু আছে। কিন্তু উক্ত জমি মসজিদের জন্য লিখিতভাবে বা কাগজে-পত্রে ওয়াকফ হয়নি। এখন আমরা ওয়ারিসগণ উক্ত জমি মসজিদের জন্য লিখিতভাবে বা কাগজে-পত্রে ওয়াকফ করে মসজিদের দ্বিতীয় তলায় হেফযখানা নির্মাণের ইচ্ছা পোষণ করছি।

অতএব আমার জানার বিষয় হলো, যদি আমরা ওয়ারিশগণ লিখিতভাবে বা কাগজে পত্রে উক্ত জমি মসজিদের জন্য ওয়াকফ করে মসজিদের দ্বিতীয় তলায় হেফযখানা করি তা পারব কি না? শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েয আছে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

মুহাম্মদ আমানত উল্লাহ

রামু, কক্সবাজার

শরয়ী সমাধান: স্মরণ রাখতে হবে যে, ইসলামি শরীয়তের মধ্যে কোনো জায়গার আসল মালিক তার মালিকানাধীন কোন জায়গাকে মৌখিকভাবে মসজিদের জন্য দিয়ে দিলে এবং তার মধ্যে ৫ ওয়াক্ত নামায ও জুমার নামায ইত্যাদি চালু হয়ে গেলে সেই জায়গা ও মসজিদটি শরয়ী মসজিদ হিসেবে গণ্য হয়ে যায়। লিখিতভাবে মসজিদের জন্য ওয়াকফ করা জরুরি হয় না। সুতরাং প্রশ্নে উল্লিখিত মসজিদটি যখন মসজিদের জায়গার আসল মালিক মৌখিকভাবে মসজিদের জন্য দিয়ে দিয়েছেন এবং অনেক বছর থেকে তার মধ্যে জামাত সহকারে নামায চালু আছে, তখন উক্ত মসজিদ শরয়ী মসজিদ হিসেবে পরিগণিত হয়ে গেছে। তাই পরবর্তীতে মসজিদের জন্য জমিদাতার ওয়ারিশগণের পক্ষে উক্ত মসজিদের ওপর হেফজখানা বা অন্য কোনো দীনী প্রতিষ্ঠান করা জায়েয ও বৈধ হবে না। কেননা উক্ত মসজিদটি যখন শরয়ী মসজিদ হিসেবে গণ্য হয়ে গেছে, তখন পাতাল থেকে আকাশ পর্যন্ত সেই জায়গাকে মসজিদ হিসেবে বহাল রাখতে হবে। মসজিদ ব্যতীত অন্য কোনো কিছু করা জায়েয হবে না।

সূরা জিন: ১৮, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া ২/৪৫৪, ফতোয়ায়ে শামী ৬/৫৪৪


বিভাগীয় নোটিশ
দৈনন্দিন জীবনের যেকোনো সমস্যার শরয়ী সমাধান জানতে আল-জামিয়া আল- ইসলামিয়া পটিয়ার ফতওয়া বিভাগে প্রশ্ন পাঠাতে পারেন। এজন্য সরাসরি যোগাযোগ বা বিভাগের জন্য নির্দিষ্ট ফোনে যোগাযোগ করুন। প্রশ্ন পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইল বা ফেসবুক ফ্যান-পেইজেও।

★ফতওয়া বিভাগ★

আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম।

ই-মেইল: daruliftapatiya@gmail.com

পেইজলিংক: @islamiclaw.patiya

ফোন নং: ০১৮৫৬৬১৮৩৬৭ ০১৭০৩৮৩৯৯৯৭

মুফতি আহমদুল্লাহ দা.বা. ০১৭১৫৫০১৫৪০

মুফতি শামসুদ্দীন জিয়া ০১৮১৯৬৬৫১১৩

মুফতি জসিম উদ্দীন দা. ০১৮১১৬১০৫৫৪

মুফতি মানযুর সিদ্দিক ০১৮১৯৯৮০৯৮৬

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on skype
Skype
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সংবাদ

নোটিশ